- //
- রাজশাহী
রাজশাহী
পদ্মা নদীর উত্তর তীরে অবস্থিত রাজশাহী নিজ বিভাগের প্রধান জেলা এবং রাজশাহী জেলা ও রাজশাহী মহানগরের প্রশাসনিক কেন্দ্র। এটি একটি মহানগর, পাশাপাশি বাংলাদেশের একটি প্রধান প্রশাসনিক, বাণিজ্যিক ও শিক্ষাকেন্দ্র। রাজশাহী শহরটি ১৬৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৮৭৬ সালে এটি পৌরসভা ও ১৯৯১ সালে সিটি কর্পোরেশন হিসেবে স্বীকৃতি পায়। রাজশাহী শহরের আয়তন ৩৭.৩৪ বর্গমাইল এবং ২০২২ সালের হিসাব অনুযায়ী জনসংখ্যা প্রায় ১০,৮৫,০০০। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, মনোরম পরিবেশ এবং পরিচ্ছন্নতায় ঘেরা এই শহর একটি প্রাণবন্ত শহরের উদাহরণ। রাজশাহী কেবল বাংলাদেশেই নয়, এশিয়াতেও অন্যতম পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে পরিচিত।
রাজশাহীকে মূলত শিক্ষার শহর বলা হয়, কারণ এখানে অনেক উচ্চমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এটি সিল্কের জন্যও বিখ্যাত এবং শহরটি আম, লিচু ও মিষ্টিসহ নানা খাদ্যপণ্যের জন্য পরিচিত। রাজশাহীকে সিল্ক সিটি হিসেবেও ডাকা হয়। শহরটি সুন্দর, বিশুদ্ধ বাতাস এবং দূষণমুক্ত পরিবেশের জন্য প্রসিদ্ধ। এখানে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাস, যাদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে। একইসাথে রাজশাহী শান্তি ও নিরপেক্ষতার শহর হিসেবে খ্যাত।
রাজশাহীতে দেশের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, থিয়েটার, ক্রীড়াক্ষেত্র, জাদুঘর, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, কৃষি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান, চিড়িয়াখানা, বিনোদন কেন্দ্র এবং কিছু ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে। শিক্ষার পাশাপাশি রাজশাহীতে বিভিন্ন কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। রাজশাহীর অর্থনীতি মূলত কৃষি, ব্যবসা ও শিক্ষার উপর নির্ভরশীল, তবে এখানে টেক্সটাইল মিল, ওষুধ শিল্প এবং কৃষিভিত্তিক বিভিন্ন শিল্প রয়েছে, যা অনেকের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে।
রাজশাহী অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও শিক্ষাগতভাবে বেশ উন্নত। শহরের রাস্তা মানসম্মত এবং সুন্দর, যা রাতের বেলায় আলোকিত হয়ে আরও মনোরম হয়ে ওঠে। রেল ও বিমানপথে রাজশাহী পৌঁছানো খুব সহজ, এবং সড়ক ব্যবস্থাও বেশ ভালো। রাজশাহী শহরের অভ্যন্তরে বাস, সিএনজি, রিকশা, অটোরিকশা, পাঠাও, উবারসহ বিভিন্ন গণপরিবহন ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। ব্যক্তিগত যানবাহনও পাওয়া যায়। প্রতিদিন অনেক মানুষ রাজশাহী ভ্রমণ করেন, কারণ বিভাগীয় সদর দপ্তরের সকল কাজ এখানেই সম্পন্ন হয়। এছাড়া এই প্রাচীন শহরে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থাও রয়েছে।
রাজশাহীর আবহাওয়া ক্রান্তীয় আর্দ্র ও শুষ্ক। এছাড়া গ্রীষ্মকালে রাজশাহীর তাপমাত্রা কিছুটা বেশি থাকে, যা আম উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাজশাহীতে প্রচুর গাছপালা রয়েছে, যার ফলে পরিবেশটি বেশ তাজা থাকে। রাজশাহী প্রাণবন্ত লোকসংগীত, নৃত্য ও সাহিত্যেও পরিচিত। রাজশাহীতে পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য অনেক স্থান রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর, বাঘা মসজিদ, পুঠিয়া মন্দির এবং সোমপুর মহাবিহার, যা একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট।
সামগ্রিকভাবে, রাজশাহী বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর। এটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কৃষি ঐতিহ্য এবং পর্যটক আকর্ষণের জন্য খ্যাত।
সিটি ইনসাইট
পরিচিত ল্যান্ডমার্ক সমূহ
Puthia Temple
Bagha Mosque
Bangabandhu Novo Theatre
Padma T Badh
Varendra Museum
Shah Makhdum Mazar
Shahid AHM Kamaruzzaman Central Park and Zoo
Shahid Zia Park
Rajshahi University