কর্নেলহাট, বন্দর নগরী চট্টগ্রাম জেলার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক এবং বাণিজ্যিক এলাকা। গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক, সমুদ্র বন্দর, এবং পোর্ট সংলগ্ন সংযুক্ত সড়ক বেষ্টিত হওয়ায়, এলাকাটি অর্থনৈতিক দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ। এলাকাটি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের খুব কাছে অবস্থিত। প্রচুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান, এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বেষ্টিত এলাকাটি বেশ কোলাহল পূর্ণ।<br><br>
কর্নেল হাট এলাকাটি, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ০৯ ওয়ার্ডের অংশ, এটি কোতোয়ালি থানার অন্তর্ভুক্ত একটি এলাকা। এই এলাকার পূর্ব দিকে নাসিরাবাদ এবং অক্সিজেন মোড়, দক্ষিণ দিকে হালিশহর এবং চট্ট্রগ্রাম বন্দর, উত্তর দিকে সলিমপুর এবং জালালাবাদ, এবং পশ্চিম দিকে সমুদ্র সৈকত। ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে, কর্নেল জোন্স রোড, ঢাকা ট্রাঙ্ক রোড, পোর্ট কানেকটিং রোড, নিউ মনসুরাবাদ রোড, এবং ইশান মহাজন রোড, এই এলাকাটিকে সারা দেশের সাথে সংযুক্ত করেছে।<br><br>
কর্নেলহাট চট্টগ্রাম শহরের প্রধান প্রবেশদ্বার, তাই এলাকাটি 'সিটি গেট' নামেও পরিচিত। কর্নেল হাট বাস স্টপ থেকে ঢাকা, কক্সবাজার, কুমিল্লা, সিলেট সহ চট্রগ্রাম জেলার সকল এলাকায় যাতায়াত করা যায়। এছাড়াও এই এলাকা থেকে সীতাকুণ্ডু, খৈয়াছড়া এবং গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতের মতো পর্যটন স্থানগুলোতে সহজেই যাতায়াত করা যায়। আন্তঃনগর বাস, লোকাল বাস, সিএনজি অটোরিকশা, রিকশা, বাইক শেয়ারিং সার্ভিস, ইত্যাদি সকল গণ পরিবহণ সুবিধা এখানে পাওয়া যায়।<br><br>
কর্নেলহাট এলাকার অর্থনীতি মূলত ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পরিবহন নির্ভর। চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, তেল শোধনাগার, এবং বিভিন্ন কনটেইনার পোর্ট, এই এলাকার অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানে ব্যাপক অবদান রেখেছে। বিএসআরএম স্টিল, গোল্ডেন ইস্পাত লিমিটেড, মেঘনা গ্রুপ, প্যাসিফিক নিটওয়ার, ইস্পাহানি, ইউনিলিভার কনজ্যুমার, আশা ব্রাঞ্চ অফিস, ইত্যাদি বিভিন্ন শিল্প ও বাণিজ্যিক কোম্পানি এখানে অবস্থিত।<br><br>
এলাকাটির কাছেই বেশ কিছু উন্নতমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এবং হাসপাতাল রয়েছে। চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, বাংলাদেশ, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, নেভাল একাডেমি, এবং ফয়েজ লেক, এই এলাকার খুব কাছেই অবস্থিত। হিলটপ পুলিশ ক্যাম্প এবং কোতোয়ালি থানা এই এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করেছে।<br><br>
এই এলাকায় বেশ কিছু ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে। ফয়েস লেক, পতেঙ্গা সমুদ্র বন্দর এবং চট্রগ্রাম চিড়িয়াখানায় প্রচুর দর্শণার্থীর আগমন ঘটে। এই এলাকায় মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী মানুষজন মিলেমিশে বসবাস করেন। এলাকাটিতে প্রচুর মসজিদ, মন্দির, এবং আশ্রম রয়েছে।<br><br>
চট্রগ্রামের ফুড কালচার সারা দেশে বিখ্যাত। এই এলাকার মেজ্জান, মাহেরি মিষ্টি এবং কাঠালী চাটনি, সারা দেশে জনপ্রিয়। এলাকাটি কাঁচাবাজার, সুপারশপ, শপিংমল, রেস্টুরেন্ট, খেলার মাঠ, ব্যায়ামাগার, ইত্যাদি সুবিধা সম্পন্ন। কর্নেল হাট সিটি কর্পোরেশনের বহুতল বাজারটিতে আপনার দৈনন্দিন জীবনের সকল প্রয়োজনীয় জিনিস পাবেন।<br><br>
কর্নেলহাট এলাকাটিতে প্রচুর আবাসিক ভবন রয়েছে। আবাসিক এলাকাগুলোর নিরাপত্তা, পয়ঃনিস্কাশন এবং ইউটিলিটি সার্ভিস বেশ ভালো। শিক্ষা, কর্ম সংস্থান, স্বাস্থ্য সেবা, এবং নাগরিক পরিষেবা সুবিধা সম্পন্ন হওয়ায় এখানে আবাসিক এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনেক বেশি। এই এলাকার প্রপার্টির ভাড়া এবং দামও তুলনামূলক বেশি।
অন্তর্দৃষ্টি দেখুন